ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা বলা হয় কেন

ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা বলা হয় কেন

প্রিয় পাঠক, 

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।

ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। মহান আল্লাহ তা’য়ালা ইরশাদ করেন- "যা'লিকাল কিতাবু লা'রাইবা ফিহি হুদাল্লিল মুতাক্কিন"। 
(সুরা বাকারা, আয়াত-০২) 

অর্থঃ ইহা সেই কিতাব যাহাতে কোন প্রকার সন্দেহ নেই, আর এটি খোদাভীরুদের জন্য পথনির্দেশিকা।


ইসলাম আরবী শব্দ। এটি এসেছে "সিলম"বা "সালাম" ধাতু থেকে। "সিলম" বা "সালাম" এর অর্থ শান্তি, চুক্তি বা সন্ধি। ইসলামের আবিধানিক অর্থ অনুগত হওয়া, আনুগত্য করা, আত্বসমর্পন করা, শান্তির পথে চলা ও মসুলমান হওয়া। অনুগত হওয়া মানে কাহারো প্রিয়ভজন হতে চেষ্টা বা সাধনা করা, আনুগত্য করা মানে কাহারো নেতৃত্ব ও কতৃত্বকে গ্রহনের মাধ্যমে তার আদেশ ও নিশেধসমুহ মান্য করা, আত্বসমর্পন অর্থ হচ্ছে কাহারো স্রেষ্টত্ব স্বীকার করা। এক কথায়, ইসলাম হচ্ছে নিজের ইচ্ছাকে আল্লাহর কাছে সমর্পনের মাধ্যমে শান্তি অর্জন করা।

ইসলামের মূল আদর্শ কী?

ইসলামের মূল আদর্শ হল মানবতার প্রচার এবং প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সমাজের প্রগতির অনুপ্রেরণা দেওয়া। ইসলাম শান্তি, সহিষ্ণুতা এবং ভাল সম্পর্কের মাধ্যমে মানবতার সম্মান ও সমৃদ্ধি বাড়াতে বিশেষ গুরুত্ব দেয়। এটি মানবিক সম্পর্ক এবং পরিবারের প্রতি দায়িত্ব সম্পর্কে সঠিক নীতি প্রদর্শন করে। ইসলামের আদর্শ অন্যান্যের মধ্যে ধর্মীয় মধ্যে শান্তি এবং সম্মান সৃষ্টি করে, যা একটি সৎ এবং সমগ্র সমাজের গঠনে সাহায্য করে।

ইসলামের পূর্ণাঙ্গ জীবনযাপন

ইসলামের পূর্ণাঙ্গ জীবনযাপন একটি অত্যন্ত মৌলিক অংশ, যা মুসলিমদের জীবনের প্রতি দিনের প্রতি পর্বে প্রয়োজনীয় নির্দিষ্ট নীতি এবং নীতিগুলি সরবরাহ করে। এটি তাদের পরিস্থিতি, সামাজিক দায়িত্ব এবং আধ্যাত্মিক উন্নয়নের জন্য একটি সমগ্র সংস্কৃতি বাড়ায়। ইসলামের পূর্ণাঙ্গ জীবনযাপনের মাধ্যমে মুসলিমদের ধর্মীয় প্রক্রিয়া, পূর্বাভাস এবং আদর্শ অনুসরণ করা হয়। এটি তাদের আধ্যাত্মিক ও সামাজিক উন্নয়নে সহায়তা করে এবং তাদের জীবনযাপনের উদ্দেশ্য ও অর্থনৈতিক ক্ষমতার মাধ্যমে শান্তি এবং সন্তুষ্টির অনুভূতি সৃষ্টি করে।

পরিষ্কারতা এবং অবদান

ইসলাম ধর্মে পরিষ্কারতা একটি গুরুত্বপূর্ণ পক্ষ। পরিষ্কারতা বিভিন্ন দিকে প্রয়োজন, যেমন দেহ ও মানসিক পরিষ্কারতা, সহিষ্ণুতা, শান্তি এবং পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে সঠিক নীতি প্রদান করে। ইসলাম শিক্ষা দেয় যে একজন মুসলিমের প্রতিটি ক্রিয়া ও আচরণ অনুগামী হতে হবে ধর্মীয় এবং নৈতিক সূত্রের মধ্যে। পরিষ্কারতার প্রতিটি প্রস্তাব ইসলামের শান্তি এবং সহিষ্ণুতার মধ্যে একটি মূল অংশ হিসাবে কাজ করে এবং একটি সৎ সমাজের গঠনে সাহায্য করে। ইসলামে পরিষ্কারতা অবদান করে মুসলিমদের জীবনের প্রতিটি দিনে আধ্যাত্মিক ও সামাজিক উন্নয়নে এবং তাদের ধর্মীয় এবং নৈতিক শিক্ষার মাধ্যমে মানবিক পরিস্থিতির অনুভূতি সৃষ্টি করে।

ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা বলা হয় কেন

ইসলামের জীবনের উপকারিতা অনেক। এটি মুসলিমদের জীবনে স্থিতিশীলতা এবং আনন্দ সরবরাহ করে। ইসলাম প্রতিটি মুসলিমকে তাদের আধ্যাত্মিক পথের প্রস্থান করতে সহায়তা করে এবং তাদের জীবনে দারিদ্র্য এবং অশান্তির সমস্যাগুলির মুক্তি দিয়ে থাকে। এটি মানবিক সম্পর্কে শান্তি এবং সহিষ্ণুতার বিচারে পরিপূর্ণ একটি পতাকা প্রদান করে। ইসলাম মুসলিমদের মধ্যে প্রেম, সহানুভূতি, এবং মানবতার মহান গুণগুলি প্রচার করে যা একটি সৎ এবং সমৃদ্ধ সমাজের গঠনে সাহায্য করে। ইসলাম পরিস্থিতির মধ্যে আন্দোলনমুক্ত সুবিধা এবং আনন্দের মধ্যে মুসলিমদের আন্তরিক শান্তি এবং সন্তুষ্টির সৃষ্টিতে সাহায্য করে।

পবিত্র আল-কুরআনে উল্লেখ আছে- "হে মুহাম্মাদ (সাঃ) বল, আমার রব নিঃসন্দেহে আমাকে সঠিক নির্ভূল পথ দেখিয়ে দিয়েছেন। সম্পূর্ণ ও সর্বতভাবে নির্ভূল দ্বীন, তাতে বক্রতার কোন স্থান নেই। ইহা ইব্রাহীমের অবলম্বিত পথ ও পন্থা, যা সে ঐকান্তিক নিষ্ঠা ও একমূখীতার সহিৎ গ্রহণ করেছিল এবং সে মুসলিমদের মধ্যে ছিল। বল, আমার নামায, আমার সর্বপ্রকার ইবাদত অনুষ্ঠান সমুহ, আমার জীবন ও আমার মৃত্যু সবকিছুই সারা জাহানের রব আল্লাহর'ই জন্য।" 
(সূরা আল-আনআম ১৬১-১৬২)।

ইসলাম একটি পরিপূর্ণ/পূর্ণাঙ্গ দ্বীন বা জীবনব্যবস্থা। যে জীবনব্যবস্থা মহান আল্লাহ তা’য়ালার কাছে অতিপ্রিয়। দুনিয়ার প্রতিটি মানুষ কোনো না কোনো দ্বীন বা ধর্মের অনুসারী হয়ে থাকে। আর এ পৃথিবীর সৃষ্টিলগ্ন থেকেই মানবজাতি জন্য এমন একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থার চরম প্রয়োজন অনুভব করে আসছিল, যার মাধ্যমে মহান আল্লাহ তা’য়ালার সান্নিধ্য অর্জন করা যায়। বিশ্ব মানবের এ সম্মিলিত প্রয়োজন মেটানোর মহান লক্ষ্যেই আল্লাহ তা’য়ালা যুগে যুগে বহু নবী-রাসূল এ পৃথিবীতে প্রেরণ করেছনে। যাতে জগদ্বাসী সর্বোত্তম দ্বীনের অনুসারী হতে পারে। কিন্তু এতদসত্ত্বেও অসংখ্য মানুষ নিজেদের সেই পুরনো গোমরাহীর ভয়াল সাগরেই নিমজ্জিত রাখল। তারা তাদের ধ্যান-ধারণা, মস্তিষ্ককে সম্পূর্ণরূপে ইসলাম ধর্মের উপর প্রাধান্য দিয়ে নানান উপায়ে ইসলামের বিরোধিতায় করতে লাগলো অথচ তারাই নিজেরই পারলৌকিক শান্তিপ্রাপ্তি ও মহান সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্য লাভের উদ্দেশ্যে সঠিক দ্বীনের সন্ধান লাভের জন্য হৃদয়ে চরম ব্যাকুলতা অনুভব করেছিল।

পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হচ্ছে- ‘আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার অবদান সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্য দ্বীন হিসেবে মনোনীত করলাম।
(সূরা মায়িদা-৩)

আল্লাহ তায়ালার কাছে একমাত্র ইসলামই সত্য-সঠিক ধর্ম হিসেবে মনোনীত। তাই তিনি বিশ্ববাসীকে সম্বোধন করে পবিত্র কুরআনের অন্যত্র ইরশাদ করেছেন- ‘তোমরা মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না। 
(সূরা আল-ইমরান-১০২)
ঘোষিত হচ্ছে- ‘নিঃসন্দেহে আল্লাহ তায়ালার কাছে গ্রহণযোগ্য দ্বীন একমাত্র ইসলাম’ 
(সূরা আল-ইমরান-১৯)

ইসলামী অনুশাষনই প্রকৃত শান্তির পথ। যে ব্যক্তি ইসলাম অনুসরণ করে সে মুসলমান। মুসলমান হচ্ছে আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পনকারী। একজন মুসলামের সকল আমল-ইবাদত শুধুমাত্র মহান আল্লাহ তা’য়ালার জন্য এবং তাকে রাজি-খুশি এবং তার সন্তুষ্টির জন্য সকল কিছু করা। আরো ভালোভাবে যদি বলা যায় তবে- ইসলাম হচ্ছে নিজের ইচ্ছাকে আল্লাহর কাছে সমর্পনের মাধ্যমে শান্তি অর্জন করা। প্রত্যেক শান্তিকামী মানুষের উচিত পবিত্র আল-কুরআন এবং রাসুল (সাঃ) এর সহীহ হাদিস নিজে অনুসরণের মাধ্যমে শান্তি অর্জন করা এবং রাষ্ট্র তথা সমাজে এই শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা।

আমরা আশা করছি আপনি আমাদের পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়েছেন এবং অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও জ্ঞান অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। 

আমাদের মূল লক্ষ্য হলো আপনাদের মাঝে সঠিক তথ্যগুলোকে উপস্থাপন করা এবং পৌঁছে দেওয়া এবং এতে আপনাদের সহযোগীতা আমরা একান্তভাবে কাম্য করছি। লেখাটি আপনাদের পরিবার, বন্ধু-বান্ধব ও আরো অন্যান্যদের নিকট শেয়ার করে তাদেরও এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি জানার সুযোগ করে দিন।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url