অফিসিয়াল আনঅফিসিয়াল ফোন চেনার উপায়

আপনার হাতে থাকা ফোনটি অফিসিয়াল নাকি আন অফিসিয়াল তা জানা অত্যান্ত জরুরী। আজকে আমরা জানবো অফিসিয়াল ফোন চেনার উপায় এবং আনঅফিসিয়াল ফোন চেনার উপায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবো এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সম্পর্কে জানবো। চলুন তবে শুরু করা যাক।

অফিসিয়াল আনঅফিসিয়াল ফোন চেনার উপায়

সম্প্রতি BTRC (Bangladesh Telecommunication Regulatory Commission)-এ কর্তৃক একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আমরা জানতে পারি যে আগামী 2024 ইং সালের জুন মাসের ভেতরে সকল প্রকার আন অফিসিয়াল স্মার্ট ফোনগুলো তাদের আওয়াতার নিয়ে সেগুলো বন্ধের বা সকল প্রকারের আপডেট সমূহ বন্ধ করে দিবে এবং সেগুলোকে কে তাদের সার্ভার হতে বিছিন্ন করা হবে। 

এতে আমরা বুঝতে পারি যে, এ-যাবৎ যত প্রকারের আন অফিসিয়াল ফোনগুলো আমরা ব্যবহার করেছি বা করছি সেগুলোতে আমরা কোনো প্রকার আপডেট বা নতুন করে কোনো ফিচার সংযোগ করা হবে না বা আমরা পারবো না। এক কথায় কোনো প্রকার কাজ আমরা আমাদের সুবিধা মত করতে পারবো না এবং এক সময় এই ফোনগুলো আপনাআপনি বন্ধ হয়ে যাবে।

আপনার হাতে থাকা ফোনটি যদি অফিসিয়াল হয় তবে আপনার জন্য ভালো খবর। কিন্তু আপনার হাতে থাকা ফোনটি যদি আনঅফিসিয়াল হয় তবে আপনার জন্য খুবই সমস্যাজনক বিষয়।

এখন আমরা একটু জানার চেষ্টা করি অফিসিয়াল আর আন অফিসিয়াল ফোনের মধ্যে পার্থক্য কী?

অফিসিয়াল ফোন কি?

যে সকল ফোন বিদেশ থেকে বাংলাদেশকে ট্যাক্স দিয়ে আমদানি করে আনা হয় অথবা যে সকল ফোন বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদিত সে সকল ফোনকে অফিসিয়াল ফোন বলে। অনেকে বিদেশ থেকে যে সকল ফোন কিনে আনে সেগুলো সব আন অফিসিয়াল ফোন।

বাজার বর্তমানে দেশি-বিদেশি কোম্পানীতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে গেছে। বিভিন্ন দেশ থেকে অসংখ্য কোম্পানীর বাজারে নিয়ে আসছে তাদের অসংখ্য নতুন মডেলের স্মার্টফোন। কিন্তু এর মধ্যে কিছু স্মার্টফোন রয়েছে, যেগুলো সরকারকে কর দিয়ে তারপর দেশে প্রবেশ করে। এসব ফোনের IMEI নম্বর সরকারের ডাটাবেজে সংরক্ষিত থাকে। অদূর ভবিষ্যতে যদি আপনার স্মার্টফোনে নিয়ে কোনো সমস্যা সৃষ্টি হয় তাহলে এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায়। অর্থাৎ ফোন কোম্পানী বৈধভাবে বিভিন্ন দেশে পৌঁছানোর জন্য সরকারী সকল কার্যক্রম বৈধ রেজিস্টেশন করণের পর কাস্টমারের হাতে তুলে দিয়ে ওয়্যারেন্টি মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত সকল দায়-দায়িত্ব বহন করে তাকে অফিসিয়াল ফোন বলা যায়। যেসব ফোনে পূর্ণ গ্যারান্টি ওয়ারেন্টি আপডেটসহ সকল সার্ভিস পাওয়া যায়।

অফিসিয়াল ফোনের সুবিধা অসুবিধা:

  1. অফিসিয়াল ফোনের দাম অনেক বেশি হয়।
  2. ফোনের সকল সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায়৷ 
  3. পূর্ণ সার্ভিস ওয়্যারেন্টি পাওয়া যায়।
  4. ফোনের বৈধ মালিকানা পাওয়া যায়।
  5. ফোন হারালে সহজে ট্রাকিং করা যায়।
  6. আসল অরিজিনাল ফোন পাওয়া যায়৷
  7. লিখিত ভাবে ফোনটি মালিকের নামে থাকে। 
  8. নিয়মিত ফোনের সকল আপডেট পাওয়া যায়।

আনঅফিসিয়াল ফোন চেনার উপায় নিচে বর্ণনা করা হলো :

আন অফিসিয়াল ফোন হলো সরকারকে কর ফাঁকি দিয়ে যেসব ফোন দেশে প্রবেশ করে। ফলে সেগুলোর IMEI নম্বর সরকারি ডাটাবেজে সংরক্ষিত থাকে না। অদূর ভবিষ্যতে এ ধরনের ফোন ক্রয় করলে আপনি সমস্যার সম্মুখীনও হতে পারেন। অর্থাৎ ফোন কোম্পানী, ব্যবসায়ী অবৈধ ভাবে বিভিন্ন দেশের ফোন সরকারী সকল ভ্যাট ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে, নিবন্ধন, রেজিস্টেশন না করে, কাস্টমারের কাছে সরাসরি বিক্রয় করে থাকে। যেগুলো ফোন কোম্পানি ওয়্যারেন্টি দেয় না বা কোন দায়-দায়িত্ব বহন করে না, তাকে আন অফিসিয়াল ফোন বলা যায়। এছাড়া আন অফিসিয়াল ফোন হারিয়ে গেলে সে ফোনটি খুঁজে বের করতে বেশ বেগ পেতে হবে।

আন অফিসিয়াল ফোনের সুবিধা অসুবিধা:

  1. আন অফিসিয়াল ফোনের দাম অনেক কম হয়৷
  2. ফোনের কোন সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায় না। 
  3. পূর্ণ সার্ভিস ওয়্যারেন্টি পাওয়া যায় না।
  4. ফোনের বৈধ মালিকানা পাওয়া যায় না ।
  5. ফোন হারালে সহজে পাওয়া যায় না।
  6. আসল অরিজিনাল ফোন পাওয়া যায় না ।
  7. লিখিত ভাবে ফোনের মালিকানা যায় না ।
  8. ফোনের কোন আপডেট পাওয়া যায় না।

এখন প্রশ্ন হলো আপনার হাতে থাকা ফোনটি অফিসিয়াল নাকি আন অফিসিয়াল তা কিভাবে আপনি বুঝবেন? নিচে এর বিস্তারিত বলা হলো এবং নিচের নিয়ম অনুযায়ী কাজ করলে আপনি সহজে বুঝত পারবেন যে আপনার হাতে থাকা ফোনটি অফিসিয়াল নাকি আন অফিসিয়াল।
  • প্রথমে আপনার মোবাইলটির ডায়াল প্যাড এ গিয়ে টাইপ করুন *#০৬#
  • তারপর দেখতে পাবেন ১৫ সংখ্যার দুইটি কোড। এই কোট্টিকে বলে আইএমইআই (IMEI) কোড। এবার এই কোডটি কপি করে রেখে দিন।
  • তারপর ফোনের মেসেজ অপশনে গিয়ে টাইপ করুন KYD স্পেস ১৫ ডিজিটের আইএমইআই (IMEI) নম্বর ।
  • তারপর পাঠিয়ে দিন ১৬০০২ নাম্বারে।
  • আপনার এসএমএস যাওয়ার পর BTRC-কর্তৃপক্ষ থেকে আপনাকে একটা এসএমএস পাঠাবে। 
এই এসএমএস এর লিখা থাকবে আপনার ফোনটি বৈধ না অবৈধ। যদি আপনার ফোনটি বৈধ হয় তাহলে লিখা থাকবে [এই ডিভাইসটি আমাদের ডাটাবেজ এ পাওয়া গেছে ] আর যদি অবৈধ হয় তাহলে লিখা আসবে [আপনার ডিভাইসটি আমাদের ডাটাবেজে নিবন্ধিত নয় ]।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url