সকালে খালি পেটে গরম পানি খাওয়ার উপকারিতা

আজকে আমরা জানবো প্রতিদিন সকালে গরম পানি খাওয়ার উপকারিতা বা কুসুম গরম পানি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা কতটুকু রয়েছে।

সকালে খালি পেটে গরম পানি খাওয়ার উপকারিতা

প্রত্যেকদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস কুসুম গরম পানি খাওয়া মাত্র আপনার দেহের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে থাকা সমস্ত বিষাক্ত পদার্থগুলোকে একদম কেঁচে বের করে দেই গরম পানি। দীর্ঘদিন ধরে যারা বাতের ব্যাথায় ভুগছেন তাঁরা তো গরম পানি অবশ্যই খাবেন। আপনার পান করা এই হালকা কুসুম গরম পানি আপনার শরীরে জমে থাকা অপ্রয়োজনীয় বিষাক্ত পদার্থগুলোকে ঘামের মাধ্যমে বের করে দেই। ফলে শরীরে থাকা যেকোনো ব্যাথাবোধও ক্রমশ মতে থাকবে। মাথা ব্যাথা ক্ষেত্রেও এই একই প্রযোজ্য। মাথা ব্যাথা ও ঘাড় ব্যাথা হলে অল্প পরিমানে গরম পানি বারেবারে পান করতে থাকুন। কিছুক্ষনের মধ্যেই দেখবেন মাথা ব্যাথা একেবারেই দূর হয়ে গেছে। গরম পানি ঠান্ডা জনিত যেকোনো রোগ দূর করতে পারে। যারা ঘন ঘন ঠান্ডা এলার্জি বা শ্বাসকষ্ট ও বুকে কফ জমার সমস্যায় ভুগছেন, তাঁরা অব্যশই সবসময় হালকা গরম পানি পান করবেন। যাদের গলা খুস খুস করে বা খুসখুসে কাশি, কথা বলতে গেলেই গলা ভার হয়ে আসে, আপনার জন্য ঝটপট সমাধান হলো হালকা গরম পানি পান করুন। এতে করে আপনার এই সমস্যা দূর হয়ে যাবে। যারা দ্রুত ওজন কমাতে চান আপনি হালকা গরম পানি পান করুন, আপনার হালকা গরম পানি পান করার ফলে আপনার শরীরে অতিরিক্ত ক্যালোরিগুলো পুড়িয়ে আপনাকে চর্বি মুক্ত করে দেয় এই গরম পানি। এটি অ্যান্টি-এইজিং তথা আপনার ত্বক কুঁচকে যাওয়া বা ত্বকের চামড়ায় খসখসে ভাব হওয়া এই ধরণের সমস্যাও দূর করে। গবেষণা বলছে হালকা গরম পানি বার্ধক্যজনিত রোগ প্রতিরোধ করতে পারে অনেক বেশি। 

এখন আসুন একটু জেনে নেই আমরা যে গরম পানি পান করবো তার একটি নির্দিষ্ট সময় ও নিয়ম রয়েছে। নিয়মটি হলো: অবশ্যই সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে আপনাকে এক লিটার কুসুম গরম পানি বা হালকা গরম পানি পান করতে হবে। যদি এক লিটার পান করা আপনার পক্ষে সম্ভব না হয় তবে অন্তত 600-700 গ্রাম পানি পান করার চেষ্টা করুন। অর্থাৎ আধ কেজি থেকে একটু বেশি পান করার চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন, সকালবেলা 1 লিটার কুসুম পানি পান করার কিছুক্ষণ পর যদি আপনি টয়লেট সারেন, তাহলে আপনার সারা রাতে জমে থাকা সমস্ত বর্জ্য পদার্থ বা বিষাক্ত উপাদান শরীর থেকে বের হয়ে যাবে। এতে করে আপনার শরীর একেবারে পরিষ্কার হয়ে যাবে। সকালে ঘুম থেকে উঠে যদি এইভাবে এক লিটার কুসুম গরম পানি পান করেন, তাঁর আধা ঘন্টা পর সকালের নাস্তা খেতে পারেন এবং আধা ঘন্টা পর হালকা ব্যায়াম ও হাঁটচলা করতে পারেন। তাহলে দেখবেন জীবনে কোনোদিন আর পেটের কোন সমস্যা থাকবে না। গ্যাস, অ্যাসিডিটি, টক ঢেকুর বা কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়ারিয়া এই ধরণের সমস্যা একদম দূর হয়ে যাবে। শুধুমাত্র নিয়মিত এইভাবে খালি পেটে কুসুম গরম পানি পানের অভ্যেসটা গড়ে তুলুন। মেদ ভুঁড়ি বা পেশীর ব্যাথা, মাথাব্যাথা ইত্যাদি সমস্যাগুলো এখান থেকে শুরু, এজন্য আপনাকে আজ থেকে এই অভ্যেসটি করতে হবে। 

আরও জানে নেন যে, সকালে গরম পানি খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। তা শরীরের তাপমাত্রা বাড়ায়, যা দেহের অংশগুলির স্বাভাবিক কাজে সাহায্য করে। গরম পানি খেয়াল রাখে পেটের ক্ষেত্রে ভালো অবস্থা বজায় রেখে এবং ডাইজেস্টিভ সিস্টেমকে সাহায্য করে খাদ্য পরিস্থিতি উন্নত করে। এটি ত্বকের স্বাস্থ্যকে উন্নত করে এবং শরীরের অল্প পানি অনুসরণ করে। সকালে গরম পানি পান করা মনোবল বাড়িয়ে দেয় এবং শরীরের শুরু হয় সঠিক উদ্যান সার্কুলেশন।

সর্বশেষ একটি কথা বলি- সম্ভব হলে ফ্রিজের পানি একেবারেই পরিত্যাগ করুন এবং গরম পানি অত্যাধিক মাত্রায় খাবেন না। সেই গরম পানি আপনার শরীরের জন্য উপকার, সেই গরম পানি আপনার মুখের জন্য পরিপূর্ণ রূপে সহনীয় মাত্রায় রয়েছে।

সূত্রে:- “আলোর পথ”।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url