বেশি বেশি গাছ লাগানো প্রয়োজন কেন এবং গাছ আমাদের কি কি উপকার করে?

আজকে আমরা আলোচনা করবো বেশি বেশি গাছ লাগানো প্রয়োজন কেন এবং গাছ আমাদের কি কি উপকার করে? চলুন তবে বিস্তারিতভাবে জানা যাক।

গাছ আমাদের কি কি উপকার করে
গাছ আমাদের পরম বন্ধু। গাছের তৈরী অক্সিজেন আমরা গ্রহণ করে বেঁচে আছি এবং আমাদের দেহ হতে ছাড়া বিষাক্ত কার্বন ডাই-অক্সাইড গাছ নিজে গ্রহণ করে সাহায্য করে আসছে। গাছে ধরা ফুলের সৌন্দর্য আমাদের মনকে প্রফুল্ল করে। ফল মানুষের পুষ্টি জোগায়। বৃক্ষ আমাদের ছায়া দেয়। অকাজের গাছটিও জ্বালানি হিসেবে মানুষের উপকারে আসে। শিল্পের নানা উপাদান হিসেবে গাছ ও তার ফল ব্যবহার করা হয়। গাছের সীমাহীন গুরুত্ব থাকার সত্ত্বেও আমাদের বনগুলোর অবস্থা আজ হতাশাজনক। বিখ্যাত সুন্দরবন আমাদের গর্ব। কিন্তু এখন আর সুন্দরবনের সেই অপরূপ সৌন্দর্য নেই। ভাওয়ালের শাল-গজারীর বন ধ্বংসের পথে। মধুপুর আর সিলেটের বনের অবস্থাও ভালো নয়। পাবর্ত্য জেলাগুলোর বনের অবস্থা কারও অজানা নয়। র্নিবিচারে বৃক্ষ নিধনের ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে পাহাড়ধস ও নদী ভাঙনের ঘটনা, ধ্বংস হচ্ছে শত-শত বসতবাড়ী, প্রাণ হারাচ্ছে মানুষ সেই সাথে বনে থাকা হাজার-হাজার প্রাণী তাদের একমাত্র বাসস্থান হারিয়ে ফেলছে এবং প্রতিনিয়ত তারা মারা যাচ্ছে আজ আমাদের জন্য। এভাবে বাংলাদেশ হারাতে বসেছে তার চিরচেনা রূপ।

মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে থেকে আসা লাখ লাখ রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে পার্বত্য বনাঞ্চলে প্রবেশ করে বন উজাড় করে বসতবাড়ি গড়ে তুলেছে। তারা জ্বালানি ও জীবন নির্বাহের জন্য কী পরিমাণ বৃক্ষনিধন করছে তা আজও আমাদের কল্পনার বাইরে বললে চলে। আজ চট্টগ্রামের পাহাড়ি বনের অবস্থাও করুণ। জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার জন্য একটি দেশের আয়তনের এক-চতুর্থাংশ বনাঞ্চল থাকা জরুরী। আমাদের রয়েছে মাত্র ১২-১৫ শতাংশ বনভূমি। বর্তমান বাস্তবতায় এর পরিমাণও কমছে। এ কারণে নানা প্রাকৃতিক বিপর্যয় আমাদের নিত্যসঙ্গী। এখনই বিষয়টি আমাদের গুরুত্বর সাথে চিন্তা-ভাবনা করা দরকার। তা না হলে এক পর্যায় দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেড়ে যেতে পারে, যা আমাদের জাতীয় জীবনের জন্য বিশাল হুমকিস্বরূপ।

আমাদের ভাবা দরকার খুবই করে ভাবা দরকার গাছ আমাদের কতদিন দিয়ে উপকার করে আসছে। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা সহ কতদিক দিয়ে গাছ আমাদের উপকারে আসছে।

  • গাছে গাছে হরেক রকমে ফল আমরা গ্রহণ করে থাকি, যা খুবই সুস্বাধু ও পুষ্টিযুক্ত। 
  • বিভিন্ন গাছ দিয়ে আমাদের পরিধান করা যোগ্য কাপড় তৈরী করা হচ্ছে। 
  • গাছের বড়-বড় ও মোটা-মোটা ডাল, পাতা ও বিভিন্ন অংশ দিয়ে আমরা বসবাসের জন্য ঘর নির্মাণ করছি যা খুবই পাকাপক্ত ও বসবাসের যোগ্য। 
  • শিক্ষার জন্য বিভিন্ন সামগ্রী যেমন: পেনসিল, খাতা গাছ থেকে তৈরী করা হয়। 
  • চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন ঔষধ বিশেষ করে ভেষজ ঔষধ গাছ থেকে তৈরী করা হয় যা খুবই উপকারী।

পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গাছের কোনো বিকল্প নেই

সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলে ভরা আমাদের এই প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশ। আমাদের এই দেশটিকে মায়াবী রূপ দিয়েছে প্রধানত এই দেশের গাছপালাগুলো। নানা প্রজাতির গাছ আমাদের দেশে বিদ্যমান রয়েছে। পরিবেশ রক্ষায় গাছের তুলনা হয় না যা আমরা সকলে জানি। গাছ হলো প্রাকৃতিক বায়ু ফিল্টার, যা কার্বন-ডাই অক্সাইড এবং অন্যান্য দূষক শোষণ করে এবং বায়ুমন্ডলে অক্সিজেন ত্যাগ করে। পর্যাপ্ত পরিমাণ বৃষ্টিপাতে গাছের অবদান রয়েছে। গাছ বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রভাবকে কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়া, গাছ শহুরে হিট আইল্যান্ড প্রভাব কমাতে সাহায্য করে। গাছ প্রকৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ, যা পরিবেশ রক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গাছ কেবল আমাদের অক্সিজেন সরবরাহ করে না, বরং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় অসাধারণ ভূমিকা রাখে। গাছ বাতাস থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে এবং অক্সিজেন ছাড়ে। এই প্রক্রিয়ায় তারা বায়ু দূষণ কমায় এবং শ্বাসপ্রশ্বাসের জন্য বিশুদ্ধ বাতাস সরবরাহ করে। এটি আমাদের শারীরিক স্বাস্থ্য এবং জীবনের মান উন্নত করতে সহায়ক। গাছ মাটির ক্ষয় রোধ করে। গাছের শিকড় মাটিকে ধরে রাখে এবং বৃষ্টির পানি শোষণ করে, যা মাটির উর্বরতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি কৃষি উৎপাদন বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গাছ বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল হিসেবে কাজ করে। বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, প্রাণী ও পোকামাকড় গাছে বাস করে এবং তাদের জীবনচক্র সম্পন্ন করে। গাছের মাধ্যমে এই জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়। গাছ তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। শহরাঞ্চলে গাছের ছায়া তাপমাত্রা কমায় এবং তাপদাহ থেকে রক্ষা করে। এছাড়া, তারা আর্দ্রতা বজায় রাখতে সহায়তা করে, যা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।

গাছ সৌন্দর্য বর্ধন করে এবং মানসিক শান্তি প্রদান করে। সবুজ গাছপালা মানুষকে মানসিকভাবে প্রশান্ত করে এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে সহায়তা করে।

সব মিলিয়ে বলা যায়, পরিবেশ রক্ষায় গাছের ভূমিকা অপরিসীম। গাছ আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় তাদের গুরুত্ব অপরিসীম। অতএব, গাছ রোপণ ও সংরক্ষণে আমাদের সক্রিয় ভূমিকা পালন করা উচিত।


গাছ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 
আমরা সকলে জানি জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ হলো অন্যতম একটি দেখ। এটি আমাদের ভৌগলিক অবস্থান, জনসংখ্যার আধিক্য, প্লাবনভূমি, উচ্চ দারিদ্রের হার এবং প্রাকৃতিক সম্পদের উপর অত্যাধিক নির্ভরতার কারণে। 

পৃথিবীর পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্রে ভারসাম্য বজায় রাখতে গাছের অবদান অনস্বীকার্য। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রধান কারণ হলো বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2) এবং অন্যান্য গ্রিনহাউস গ্যাসের বৃদ্ধি। গাছ এই গ্যাসগুলো শোষণ করে এবং জলবায়ুর উপর বিভিন্নভাবে প্রভাব ফেলে। গাছ বাতাস থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে এবং সালোকসংশ্লেষণের মাধ্যমে অক্সিজেন মুক্ত করে। এই প্রক্রিয়ায় গাছ বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ কমিয়ে আনে, যা গ্রিনহাউস এফেক্ট কমাতে সহায়ক। এটি পৃথিবীর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গাছ তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। গাছপালা বাষ্পীভবন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্প ছাড়ে, যা পরিবেশকে শীতল রাখতে সহায়তা করে। এছাড়া, গাছের ছায়া ভূমির তাপমাত্রা কমিয়ে আনে, যা স্থানীয় জলবায়ুকে নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। গাছ মাটির ক্ষয় রোধ করে এবং জল সংরক্ষণে সহায়তা করে। গাছের শিকড় মাটিকে ধরে রাখে এবং বৃষ্টির পানি শোষণ করে, যা ভূমিক্ষয় কমায়। এটি পানির সংরক্ষণ ও ভূগর্ভস্থ পানির স্তর বৃদ্ধিতে সহায়ক। গাছ বায়ু দূষণ কমায়। গাছ বায়ু থেকে বিভিন্ন ক্ষতিকর গ্যাস ও ধূলিকণা শোষণ করে, যা বায়ুর গুণমান উন্নত করে। এটি মানবস্বাস্থ্যের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং শ্বাসকষ্টজনিত রোগ কমায়।

গাছ জীববৈচিত্র্য রক্ষা করে। বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা ও জীবজন্তু একে অপরের উপর নির্ভরশীল। গাছ তাদের আবাসস্থল সরবরাহ করে এবং খাদ্য চক্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই জীববৈচিত্র্য রক্ষা জলবায়ুর ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক।

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় গাছের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গাছ কেবল পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় নয়, মানবজাতির টিকে থাকার জন্যও অপরিহার্য। তাই আমাদের উচিত আরও বেশি গাছ রোপণ করা এবং তাদের সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা, যাতে আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কমিয়ে একটি সবুজ ও সুস্থ পৃথিবী গড়তে পারি।

গাছপালা রোপণ ও সংরক্ষণের মাধ্যমে পরিবেশের সবুজ পরিসর বৃদ্ধি করার প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়া পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায়, বায়ু দূষণ কমাতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় অত্যন্ত কার্যকর। গাছ বাতাস থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে এবং অক্সিজেন প্রদান করে, যা আমাদের শ্বাসপ্রশ্বাসের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এছাড়া, গাছ মাটি ধরে রাখতে সাহায্য করে এবং ভূমিক্ষয় রোধ করে। সবুজায়ন নগর এলাকায় তাপমাত্রা কমাতে সহায়ক, যা তাপদাহ কমিয়ে পরিবেশকে শীতল রাখে। সবুজায়ন শুধু পরিবেশের জন্যই নয়, মানবস্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী। এটি মানসিক প্রশান্তি আনে এবং জীববৈচিত্র্য রক্ষা করে।

অতএব, আমাদের উচিত ব্যাপকভাবে গাছ লাগানো ও তাদের সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা, যাতে আমরা একটি সবুজ ও সুস্থ পৃথিবী গড়ে তুলতে পারি।

গাছ লাগানো পরিবেশ ও মানবজাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মাটির উর্বরতা বৃদ্ধিতে গাছের ভূমিকা অনস্বীকার্য। গাছের পাতা ও অন্যান্য অবশিষ্টাংশ মাটিতে পচে প্রাকৃতিক সার হিসেবে কাজ করে, যা মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে।

স্বাস্থ্যকর পরিবেশ রক্ষায় গাছ অত্যন্ত কার্যকর। তারা বাতাস থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে অক্সিজেন সরবরাহ করে, যা আমাদের শ্বাসপ্রশ্বাসের জন্য অপরিহার্য। এছাড়া, গাছ বায়ু দূষণ কমিয়ে পরিবেশকে নির্মল রাখে।

ভূমিধস প্রতিরোধেও গাছের গুরুত্ব অপরিসীম। গাছের শিকড় মাটি ধরে রাখে, যা ভূমিক্ষয় রোধ করে এবং ভূমিধস প্রতিরোধ করে।

খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গাছের ভূমিকা রয়েছে। ফল, বাদাম ও অন্যান্য খাদ্য সরবরাহ করে গাছ আমাদের খাদ্য চাহিদা পূরণে সহায়ক।

বন পুনরুদ্ধার ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে গাছ অপরিহার্য। বনাঞ্চল গড়ে তোলা এবং বিদ্যমান বন রক্ষা করে আমরা বন্যপ্রাণীর বাসস্থান নিশ্চিত করতে পারি।

অতএব, গাছ লাগানো শুধু পরিবেশ রক্ষাই নয়, আমাদের সার্বিক জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের জন্যও অত্যন্ত জরুরি।

পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে, মানুষের প্রাণ বাঁচাতে, দেশের উন্নয়ন করতে, দেশকে বিভিন্ন প্রকৃতিক দূর্যোগ হতে রক্ষা করতে বৃক্ষরোপণ বর্তমান সময়ে একটি অত্যন্ত জরুরী কার্যক্রম হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এবং জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় গাছের ভূমিকা অনস্বীকার্য। গাছ বাতাস থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে এবং অক্সিজেন প্রদান করে, যা আমাদের বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য।

এছাড়া, গাছ মাটির ক্ষয় রোধ করে, জল সংরক্ষণে সহায়ক এবং বায়ু দূষণ কমায়। জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও প্রাকৃতিক আবাসস্থল প্রদানেও গাছের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

মনে রাখুন এবং মাথায় রাখুন সবসময়ের জন্য বৃক্ষ আমাদের পরিবেশের অতি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান এবং অন্যতম বনজসম্পদ। বৃক্ষের পাতা, ফল ও বীজ আমরা খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে থাকি। বৃক্ষ থেকে তন্তু আহরণ করে আমাদের পরিধানের বস্ত্র প্রস্তুত করা হয়। বৃক্ষ থেকে প্রাপ্ত কাঠ দিয়ে আমাদের বাড়িঘর ও আসবাবপত্র তৈরী করা হয়। আমাদের অতি প্রয়োজনীয় লেখার সামগ্রী কাগজ ও পেনসিল বৃক্ষের কাঠ দিয়েই তৈরি করা হয়। বৃক্ষ পরিবেশের সৌন্দর্যও বৃদ্ধি করে। বৃক্ষ শুধু প্রাকৃতিক শোভাই বাড়ায় না বরং মাটির ক্ষয় রোধ করে, বন্যা প্রতিরোধ করে, ঝড় তুফানকে বাধা দিয়ে জীবন ও সম্পদ রক্ষা করে। আবহাওয়া নিয়ন্ত্রণেও বৃক্ষের ভূমিকা অপরিসীম। বৃক্ষ ছাড়া পৃথিবী মরুভূমিতে পরিণত হতো। জীবজগৎকে ছায়া দিয়ে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে বৃক্ষ। বিস্তৃত বনাঞ্চলের বৃক্ষ জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ুকে ঘনীভূত করে বৃষ্টিপাত ঘটায়। উদ্ভিদের অভাবে বৃষ্টিপাতেরও তারতম্য দেখা দেয়। বৃক্ষ বহুমূল্য বনজসম্পদ। তাই একদিকে বৃক্ষ যখন ধ্বংস করা হচ্ছে, অন্যদিকে তখন নতুন বৃক্ষের সৃষ্টি করতে হবে।

অতএব, আমাদের উচিত ব্যাপকভাবে বৃক্ষরোপণ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করা এবং বিদ্যমান গাছপালা সংরক্ষণে সচেতন হওয়া, যাতে আমরা একটি সবুজ, স্বাস্থ্যকর এবং টেকসই পৃথিবী নিশ্চিত করতে পারি।

নির্বিচারে গাছ কাটাকে “না” বলি বেশি বেশি গাছ রোপণ করি

গাছ আমাদের পরম বন্ধু। গাছ না লাগালে সেটা উপলব্ধি করা যায় না। গাছ যে আমাদের বাড়ীর একজন সদস্যের মতোই, সেটা গাছ লাগালে বুঝা যায়। বেঁচে থাকার জন্যে আমরা প্রতি মুহূর্তে অক্সিজেন গ্রহণ করি। নিঃশ্বাস ছাড়ার সময় ত্যাগ করি বিষাক্ত গ্যাস কার্বন-ডাই অক্সাইড। এক হেক্টর আয়তনের ঘন অরণ্য বছরে প্রায় চার টন ওজনের কার্বন-ডাই অক্সাইড গ্যাস শুষে নেয় ও প্রায় দুই টন বিশুদ্ধ অক্সিজেন বায়ুমণ্ডলে সরবরাহ করে। এতে বোঝা যায়, জীবজগতে পরিবেশ রক্ষায় গাছ কতখানি প্রয়োজনীয় রয়েছে। এই গাছ আমাদের জীবন বাঁচাতে সাহায্য করে। গাছ না থাকলে এই পৃথিবীতে আমাদের বেঁচে থাকা সম্ভব হয়ে যেতো। একমাত্র পরিবেশে ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে গাছ। তাই এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য তৈরী করা হয়েছে বনসৃজন প্রকল্প। নির্বিচারে গাছ কাঁটা নয় গাছ লাগিয়ে যাওয়া আমাদের কাজ। তাই গাছ কাটাতে বাঁধান দেই নতুন করে বেশি বেশি গাছ রোপণ করি।

গাছ হলো মহান আল্লাহ্ তায়ালার এক অপরূপ সৌন্দর্য সৃষ্টি। যা আমাদের উপর একটি বড় নেয়ামত। আমরা সকলে এই নেয়ামতের প্রতি শুকরিয়া আদায় করি এবং এর যত্ন নেই।

আমরা আশা করছি আপনি আমাদের পোস্টটি পড়ে বেশি বেশি গাছ লাগানো প্রয়োজন কেন এবং গাছ আমাদের কি কি উপকার করে? সে সম্পর্কে একটি সু-স্পষ্ট ধারণা পেয়েছেন।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url