অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে কে এই সুপ্রদীপ চাকমা?
সুপ্রদীপ চাকমা বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি পরিচিত নাম। তিনি একজন চাকমা সম্প্রদায়ের নেতা এবং রাজনীতিবিদ। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আলোচনায় তার নাম উঠে আসার প্রধান কারণ হলো তার সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব ও বিভিন্ন জাতিগত ইস্যুতে তার ভূমিকা।
নোবেল শান্তি পুরষ্কার বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত ১৭ সদস্যের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্য হতে খাগড়াছড়ির সন্তান সুপ্রদীপ চাকমা হলেন একজন।
১৬ উপদেষ্টাদের মধ্যে সুপ্রদীপ চাকমা যিনি সাবেক রাষ্ট্রদূত ছিলেন। তিনি বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান (সচিব পদমর্যাদা) হিসেবে কর্তব্যরত রয়েছেন। ২০২৩ সালে ২৪ জুলাই তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডে যোগদান করার পূর্বে তিনি ১৯৮৫ ব্যাচের বিসিএস (এফএ) এর সদস্য ছিলেন। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামের নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী থেকে ১ম ফরেন সার্ভিসে যোগদান করেন এবং পরবর্তীকালে সচিব পর্যায়ে ১ম চাকমা হিসেবে অধিষ্ঠিত হন। দেশে-বিদেশে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পদে চাকরি করার পর সর্বশেষ মেক্সিকো সিটি, বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত পদ হতে ২০২১ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন।
সুপ্রদীপ চাকমার দীর্ঘ কর্মজীবনে মরক্কো (মালির সমবর্তী), শ্রীলঙ্কা (মালদ্বীপের সমবর্তী), বেলজিয়াম (সুইজারল্যান্ডের সমবর্তী) এবং তুরস্কে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৯-২০১৪ সাল পর্যন্ত ভিয়েতনামে (লাও পিডিআর-এর সমবর্তী) এবং ২০১৫-২০২১ সাল পর্যন্ত মেক্সিকো (কোস্টারিকা, ইকুয়েডর, হন্ডুরাস, গুয়াতেমালা, পানামা এবং পেরুতে (সমবর্তী) রাষ্ট্রদূত হিসেবে অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রশাসন, কনস্যুলার রাজনৈতিক অনুবিভাগে এবং প্রটোকলে দক্ষতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে বিভিন্ন শাখায় সহকারী সচিব, পরিচালক ও মহাপরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
সুপ্রদীপ চাকমা বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের চাকমা সম্প্রদায়ের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসেবে পরিচিত। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির বাস্তবায়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছেন এবং চাকমা সম্প্রদায়ের অধিকারের জন্য দীর্ঘদিন ধরে সংগ্রাম করছেন। চাকমা সম্প্রদায়ের মানুষের ভূমি অধিকার, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক স্বীকৃতি অর্জনের ক্ষেত্রে তিনি একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা।
তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে তিনি বিভিন্ন সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস) এর সাথে জড়িত ছিলেন, যা পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের জাতিগত জনগোষ্ঠীর স্বায়ত্তশাসনের জন্য কাজ করে। সুপ্রদীপ চাকমার রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি সাধারণত শান্তি, ন্যায়বিচার এবং অধিকারের পক্ষে।
তবে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে তার নাম উঠে আসার পেছনে বিশেষ কোনো কারণ থাকতে পারে, যা মূলত তার অভিজ্ঞতা, সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব ও দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির সাথে সম্পর্কিত।