দোকান ভাড়ার চুক্তিপত্র লেখার নিয়ম - দোকান ঘর ভাড়ার চুক্তিপত্র

আমাদের অনেকেরই বাড়তিভাবে দোকান ঘর থাকে যেটিকে আমরা ভাড়া দিয়ে থাকি। তবে দোকান ঘর ভাড়া দেওয়ার পূর্বে আমাদের একটি কাজ করতে হয় সেটি হচ্ছে, দোকান ঘর ভাড়ার চুক্তিপত্র করা। তাই আজকে লেখাটি তাদের জন্য যারা দোকান ভাড়ার চুক্তিপত্র লেখার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন।

দোকান ভাড়ার চুক্তিপত্র লেখার নিয়ম

আমরা দোকান ভাড়ার চুক্তিপত্র লেখার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানবো এবং বলে রাখি দোকান ঘর ভাড়ার চুক্তিপত্রটি মোট ০৩টি পাতায় করা হয় যা আমরা আপনাদের সঠিক মাধ্যমে লেখার নিয়মটি সম্পর্কে অবগত করবো। চলুন তবে শুরু করা যাক।

পোস্ট সূচীপত্র: দোকান ভাড়ার চুক্তিপত্র লেখার নিয়ম

দোকান ভাড়ার চুক্তিপত্র লেখার নিয়ম সম্পর্কে ভূমিকা

দোকান ভাড়ার চুক্তিপত্র যেটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আমরা দ্বিতীয় পক্ষকে যখন নিজের দোকান ভাড়ায় দেই করি তখন একটি চুক্তিপত্র করা হয় যেটিকে আমরা দোকান ঘর ভাড়ার চুক্তিপত্র বলে থাকি এবং এটি উভয় পক্ষ অর্থাৎ দোকান ঘর মালিকপক্ষ ও যে ভাড়া থাকবে মানে ভাড়াটিয়ার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আমরা নিচে দোকান ভাড়ার চুক্তিপত্র লেখার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে লিখেছি এবং এটি মূলত তিনটি পেইজে হয় যেটি আমরা দোকান ঘর ভাড়ার চুক্তিপত্র’এর পাতা নং-১,২, ও ৩ এভাবে উল্লেখ করেছি। তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে বাড়ি ভাড়ার চুক্তিপত্র লেখা হয়।

দোকান ঘর ভাড়ার চুক্তিপত্র’এর পাতা নং- ০১

“দোকান ঘর ভাড়ার চুক্তিপত্র”

১ম পক্ষঃ মোঃ মশিউর রহমান, জাতীয় পরিচয় পত্র নং- ..................................., জন্ম তারিখ:………………, পিতা- মৃত জহির উদ্দিন মন্ডল, জাতি- মুসলিম, পেশা- কৃষক, সাং- উত্তর সুজাপুর, ডাকঘর- ফুলবাড়ী, উপজেলা- ফুলবাড়ী, জেলা- দিনাজপুর। (মালিক পক্ষ)

২য় পক্ষঃ মোঃ আতাউর রহমান, জাতীয় পরিচয় পত্র নং- ..................................., জন্ম তারিখ:………………, পিতা- মোঃ হবিবর রহমান, জাতি- মুসলমান, পেশা- ব্যবসা, সাং- পাতিগ্রাম, ডাকঘর- বড়পুকুরিয়া, উপজেলা- পার্বতীপুর, জেলা-দিনাজপুর। (ভাড়াটিয়া পক্ষ)

পরম করুনা ময়ের নামে দোকানঘর ভাড়ার চুক্তিপত্র দলিল আরম্ভ করিতেছি যে, আমি দ্বিতীয় পক্ষ ব্যবসা করার প্রয়োজনে ১ম পক্ষের নিম্ন বিবরণীয় দোকান ঘরটি ভাড়া লওয়ার প্রস্তাব করায় ১ম পক্ষ উহাতে সম্মত হইলেন মতে উভয় পক্ষ একত্রে বসিয়া বিস্তারিত আলাপ-আলোচনা করিয়া নিম্নলিখিত শর্তে একমত হইয়া অঙ্গীকার ও স্বীকার করিতেছি যে,

-: শর্তাবলী :-

  • আমি ১ম পক্ষ অঙ্গীকার ও স্বীকার করিতেছি যে, নিম্ন তফসিল বর্ণিত জমির উপর দোকান ঘরটি অদ্য ইং ০১/০১/২০২২ইং সাল হইতে শুরু করিয়া আগামী ৩১/১২/২০২৪ইং সাল অর্থ্যাৎ ০৩ (তিন) বৎসর মেয়াদ পর্যন্ত দোকান ঘরে ভাড়া থাকিতে পারিবেন। মেয়াদ শেষে দোকান ঘর আমার বরাবর ছাড়িয়া দিতে বাধ্য থাকিবেন।
  • আমি ২য় পক্ষ অঙ্গীকার ও স্বীকার করিতেছি যে, জামানত বাবদ নগদ ১,৩০,০০০/- (এক লক্ষ ত্রিশ হাজার) টাকা এবং বাকি ৭০,০০০/- (সত্তার হাজার) টাকা আগামী ০৫/০১/২০২২ইং তারিখে ১ম পক্ষকে বুঝিয়ে দিবেন। একুনে ২,০০,০০০/- (দুই লক্ষ) টাকা ১ম পক্ষকে আমি ২য় পক্ষ দিলাম এবং আমি ১ম পক্ষ বুঝিয়া পাইলাম। যাহা মেয়াদ অন্তেঃ হিসাব নিকাশ করে ২য় পক্ষের জামানতের টাকা ১ম পক্ষ একযোগে ফেরত প্রদান করিবেন। উক্ত ০৫/০১/২০২২ইং তারিখে ২য় পক্ষ বাকি টাকা পরিশোধ করিতে না পারলে ১ম পক্ষ তাহার বিরুদ্ধে যে কোন প্রকার আইনানুগ বা সামাজিক ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবেন ইহাতে ২য় পক্ষ কোন প্রকার ওজর আপত্তি করিতে পারিবেন না।
চলমান পাতা নং- ০২

দোকান ঘর ভাড়ার চুক্তিপত্র’এর পাতা নং- ০২

পাতা নং-০২

  • প্রতি মাসের ভাড়া ৩,০০০/- (তিন হাজার) টাকা স্থীর করা হইল প্রতি মাসের ভাড়া পরবর্তি মাসের ১লা তারিখ হইতে ৭ম তারিখের মধ্যে ভাড়ার টাকা রশিদের মাধ্যমে পরিশোধ করিতে বাধ্য থাকিব। ইহা আমার উভয় পক্ষ মানিয়া লইলাম।
  • বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা আমি ২য় পক্ষ নিজেই করিয়া লইব এবং মাসিক বিল যাহা হইবে, তাহা আমি ২য় পক্ষ নিজেই পরিশোধ করিতে বাধ্য থাকিব। বৈদ্যুতিক ব্যাপারে ১ম পক্ষের কোন দায়-দায়িত্ব থাকিবে না।
  • আমি ২য় পক্ষ অঙ্গীকার ও স্বীকার করিতেছি যে, এই দোকান ঘরের কোন ক্ষতি জনক কাজ করিতে পারিবে না, এবং অবৈধ্য কোন কাজ বা অবৈধ্য ব্যবসা করিতে পারিব না। ঘরের পরিবর্তন বা পরিবর্ধন করিতে পারিবো না। যদি দোকান ঘরের কোন প্রকারের পরিবর্তন করার প্রয়োজন হলে ১ম পক্ষ তাহা করিয়া দিবেন।
  • আমি ২য় পক্ষ অঙ্গীকার ও স্বীকার করিতেছি যে, মেয়াদ কালিন সময় এর মধ্যে ব্যবসা চালাইতে না পারিলে তিন মাস পূর্বে জানাইতে হইবে এবং ১ম পক্ষ মেয়াদ কালীন সময় এর মধ্যে ঘরের মেরামতের প্রয়োজন দেখা দিলে ২য় পক্ষকে তিন মাস পূর্বে জানাইয়া ঘর ছাড়িয়া লইতে পারিবেন। ইহাতে ২য় পক্ষের কোন প্রকার আপত্তি গ্রহণ যোগ্য হইবে না বা টাল বাহানা করিব না। 
  • মেয়াদ উত্তীর্ণ হইবার সঙ্গে সঙ্গে ১ম পক্ষের বরাবর ২য় পক্ষ ঘরের দখল বুঝিয়া দিবেন। ১ম পক্ষ ব্যতিত অন্য কাহারো নিকট ২য় পক্ষ ঘর হস্তান্তর করিতে পারিবেনা। প্রকাশ থাকে যে, উক্ত শর্তাবলী কোন পক্ষ ভঙ্গ করিলে অপর পক্ষ তাহার বিরুদ্ধে সামাজিক বা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবেন।

 চলমান পাতা নং- ০৩

দোকান ঘর ভাড়ার চুক্তিপত্র’এর পাতা নং- ০৩

পাতা নং- ০৩
        
এতাদ্বার্থে স্বেচ্ছায় সুস্থ শরীরে খোষ মেজাজে স্বজ্ঞানে নিজ নিজ প্রয়োজনে অত্র চুক্তিপত্র লিখিত পাঠিত করিয়া ইহার মর্ম অবগত হইয়া আমরা উভয় পক্ষ নিজ নিজ নাম সহি সম্পাদন করিলাম। ইতি সন ইংরেজী -০১/০১/২০২২ইং সাল।

দোকানঘরের বিবরণ :-
জেলা- দিনাজপুর, উপজেলা- ফুলবাড়ী, মৌজা- কাঁটাবাড়ী, জে,এল নং-.....

খতিয়ান নং-

দাগ নং-

রকম    -

পরিমাণ

 

 

 

 


অত্র দলিল পড়িয়া আমরা উভয় পক্ষ সহি সম্পাদন করিলামঃ

স্বাক্ষীগণের নাম ও ঠিকানাঃ
১। নামঃ
পিতার নামঃ
সাং-

২। নামঃ
পিতার নামঃ
সাং-

৩। নামঃ
পিতার নামঃ
সাং-

এখান থেকে ৩য় পাতার লেখা শেষ এবং আপনি যদি আমাদের লেখাটি সম্পূর্ণ পড়ে থাকেন তবে দোকান ভাড়ার চুক্তিপত্র লেখার নিয়ম (০৩) টি পেইজে কি কি লেখা থাকে সে সম্পর্কে পুরোপুরি জানতে পেরেছেন বলে আমরা মনে করি।

দোকান ভাড়ার চুক্তিপত্র নমুনা pdf

শেষাংশ

আমরা যখন কাউকে দোকান ঘর ভাড়া দেই অথবা দিবো বলে চিন্তা করছি তার পূর্বে আমরা অবশ্যই একটি চুক্তিপত্র করে নিবো। এটি আমাদের জন্য ভালো। আর মনে রাখতে হবে যে, চুক্তিপত্রটি যেন অবশ্যই তিনটি ১০০ টাকার স্ট্যাম্পের উপরে করা হয়। কারণ এটি সরকারি নিয়ম আর এটি করলে এটির মূল্যতা খুবই বেশি পরিমাণে তবে। তবে আপনি চাইলে এটিকে ১৫০ বা ২০০ টাকার স্ট্যাম্পের মধ্যেও রাখতে পারেন।

আমরা আশা করছি আপনি আমাদের পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়েছেন এবং দোকান ভাড়ার চুক্তিপত্র লেখার নিয়ম - দোকান ঘর ভাড়ার চুক্তিপত্র সম্পর্কে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও জ্ঞান অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। 

আমাদের মূল লক্ষ্য হলো আপনাদের মাঝে সঠিক তথ্যগুলোকে উপস্থাপন করা এবং পৌঁছে দেওয়া এবং এতে আপনাদের সহযোগীতা আমরা একান্তভাবে কাম্য করছি। লেখাটি আপনাদের পরিবার, বন্ধু-বান্ধব ও আরো অন্যান্যদের নিকট শেয়ার করে তাদেরও এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি জানার সুযোগ করে দিন।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url